সুনামগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনা নিয়েই ৯ মাসে ৩৩ খুন

সুনামগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনা নিয়েই ৯ মাসে ৩৩ খুন

ছাগলে গাছের পাতা খাওয়া, কিংবা কাঁঠাল নিলাম নিয়ে সংঘর্ষের মতো তুচ্ছ ঘটনায় বেড়েই চলছে সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনা। গেল ৯ মাসেই তুচ্ছ ঘটনায় খুন হয়েছে ৩৩ জন। সাম্প্রতিক সময়ে সংঘর্ষের এমন ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয়রা। এ ধরনের ঘটনাকে তুচ্ছ বা ছোট হিসেবে বিবেচনা না করে প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক ও সক্রিয় হওয়ার দাবি সচেতন মহলের।

কাঁঠাল নিলাম বা জমির বিরোধ, বিচার সালিশ কিংবা ছাগলে গাছের পাতা খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ- এমন নানা তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সুনামগঞ্জে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ১৫টি আর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১৮টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। প্রতিটি ঘটনায় মামলা পাল্টা মামলা হলেও থামছে না বড় সংঘর্ষ ও খুনোখুনির ঘটনা।

গেল ৯ মাসে সুনামগঞ্জ তুচ্ছ বিষয়ে সামাজিক সহিংসতায় ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি মাসে ছোট-বড় শতাধিক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। গেল জুলাই মাসে কাঁঠাল নিয়ে সংঘর্ষে ৪ জনের প্রাণহানির মতো ঘটনায় সারাদেশে সমালোচনার ঝড় উঠে। এ ছাড়া এ বছরে বিভিন্ন সংঘর্ষে আহত হয়েছে হাজারের বেশি লোক। সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে রাগ করে তিন সন্তানকে বিষ খাওয়ান এক মা। এতে করে উদ্বিগ্ন জেলার সাধারণ মানুষজন।

সচেতন নাগরিক কমিটির সহসভাপতি খলিল রহমান বলেন, মানুষের মধ্যে ধৈর্য ও সহনশীলতা একেবারে কমে গেছে। সবকিছুতে আধিপত্য বিস্তারের মনোভাব তৈরি হয়েছে। শিশু-কিশোর থেকে সব বয়সীদের মধ্যে এমন প্রভাব দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মানুষ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে বড় অপরাধের পরেও শাস্তির নজির না থাকাকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

এর ফলে ভবিষ্যতে আরও অপরাধ করতে উসকে দিচ্ছে। তবে অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক দ্রুত সময়ে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন সংশ্লিষ্টরা।

আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো আব্দুল হক বলেন, পেশাগত পরিচয়ে আধিপত্য বিস্তারের কারণে একটি উচ্ছৃঙ্খল শ্রেণি তৈরি হওয়া একটি বড় কারণ। এ ছাড়া মামলা দীর্ঘ সময় ধরে বিচারকার্য এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় বাড়ছে এমন ঘটনা, এ ধরনের ঘটনাকে তুচ্ছ বা ছোট হিসেবে বিবেচনা না করে প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক ও সক্রিয় হওয়ার দাবি তাদের থাকতে হবে।

সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এহশান শাহ বলেন, বেশিরভাগ হত্যা হয়েছে পারিবারিক বিভিন্ন অশান্তি, পূর্ববিরোধ ও জমিসংক্রান্ত বিরোধ থেকে। পূর্ববিরোধের যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলোও শনাক্ত করে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।