মনে হচ্ছে পুলিশ আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী: আলাল

মনে হচ্ছে পুলিশ আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী: আলাল

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : একজন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির সিনিয়র নেতারা প্রায় আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নির্বাচন কমিশনের কারো সাক্ষাৎ না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে যায় একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপির ভাইস- চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন। পরে আলাল সাংবাদিকদের বলেন, ২৫ মিনিট দাঁড় করিয়ে চিঠিটা ফ্রন্টডেস্কে রিসিভ করা হলো। এখান থেকেই বোঝা যায় আচরণটা আমরা মাঠ পর্যায়ে কেমন পাচ্ছি। এটা তার একটি নমুনা।

গাজীপুরে বিএনপির প্রার্থী ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনকে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে আটক করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগে জানায় প্রতিনিধি দল। মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আরো জানান, রাজধানীর উত্তরাতেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা দেয়া হয়েছে।

আসম আব্দুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নার ওই প্রচারণায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। প্যান্ডেল ভাঙচুর করা হয়েছে, এবং সভাটি পণ্ড করে দেয়া হয়েছে।


এছাড়া, ঢাকা-১, নরসিংদী-২, ময়মনসিংহ-২, ময়মনসিংহ-৩, ময়মনসিংহ-১১, মাগুরা-১, কুষ্টিয়া-৩, মাগুরা-২, টাঙাইল-৭, ফরিদপুর-২, ঢাকা-২, সিরাজগঞ্জ-২, সিরাজগঞ্জ-৩, পটুয়াখালী-১, মৌলভীবাজার-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, নেত্রকোণা-৩, মানিকগঞ্জ-৩, চাঁদপুর-৪, নওগাঁ-২, রাজশাহী-৪ ও রাজশাহী-৬ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, আটক-গণগ্রেপ্তার ও পুলিশ প্রশাসনের হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়। এসব এলাকায় প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা দিতে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আলাল। পাশাপাশি, ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের ওপর হামলার বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করে প্রতিনিধি দল।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমাদের কাছে কেন যেন মনে হচ্ছে নির্বাচনটা ধানের শীষের পক্ষ থেকে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে না, মনে হচ্ছে যেন আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর নামে যারা আছেন তারা। আক্রমণের পর আক্রমণ, যা মন চাচ্ছে, তাই করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের এমপি এবং মন্ত্রীদের তারা প্রটোকল দিচ্ছেন, নিরাপত্তা দিচ্ছেন। আর আমাদের ধরছেন, পেটাচ্ছেন, গ্রেপ্তার করছেন। আমাদের নির্বাচনী সভাকে পণ্ড করে দিচ্ছেন আর উনারা তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন। যত দ্রুত সম্ভব সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, যেহেতু আমরা সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পাচ্ছি প্রতিনিয়ত আমাদের পেটানোর জন্য, আমাদের সভা পণ্ড করার জন্য। প্রথম থেকেই নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের যে দাবিটি ছিল, সংলাপে দাবি ছিল ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা। সেনা মোতায়েতের ব্যাপারে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হলো ১৫ তারিখ, পরবর্তীতে সেটা আমরা দেখলাম না। পরে আবার বলা হলো ২৪ তারিখ। এবং সেটা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয়নি। বলা হচ্ছে স্ট্রাইকিং ফোর্স আকারে উনারা থাকবেন।

আমাদের দাবি, যদি আমাদের মাঠে থাকার বা নির্বাচন করার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে থাকে তাহলে এ মূহুর্ত থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হোক। যাতো আমাদের প্রার্থী সমর্থক ও ভোটাররা একটু নিরাপদ বোধ করে। এত নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে নির্বাচনে যাওয়াটা আসলেই একটা দূরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে আমাদের জন্য প্রতি মুহুর্তে। যত সময় গড়াচ্ছে আমাদের শারীরিক ও অনান্য আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে।’ সম্প্রতি বিটিআরসির নির্দেশে বন্ধ করে দেয়া ৫৪টি অনলাইন পোর্টালের মধ্যে বিএনপির নিজস্ব ওয়েবসাইট বিএনপিবাংলাদেশডটকম বন্ধ করা হয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান আলাল। বিএনপির দলীয় এই ওয়েবসাইটি দ্রুত খুলে দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিতে ইসিকে জানানো হয়েছ চিঠিতে। এছাড়া, বিশ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা নির্বাচনী পোস্টারে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ব্যবহার করলে যাতে কোনো বাধার সম্মুখীন না হয় সে বিষয়েও ইসিকে অবহিত করা হয়।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৯৪০ঘ.)